টেকনিক্যাল এসইও কি (What is Technical SEO)?

টেকনিক্যাল এসইও কি (What is Technical SEO)?

 

আসসালামু আলাইকুম, Tachnical Razib এর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম । অন- পেজ অপটিমাইজেশন কি ( What's on Page optimization)? এবং অফ- পেজ অপটিমাইজেশন ( Off Page Optimization) কি? এই বিষয়গুলি নিয়ে আমি পূর্ববর্তী ( Before) পোস্টগুলোতে আলোচনা করেছি । আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের টেকনিক্যাল এসইও কি এবং ওয়েবসাইটে টেকনিক্যাল এসইও এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করবো । তো চলুন শুরু করা যাক ।

 

টেকনিক্যাল এসইও কি (What is Technical SEO)?

SEO (Search Engine Optimization):

 SEO এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন যেমন( Google, Yahoo, Bing) ইত্যাদি ব্যাবহার করে কোন একটা ওয়েবসাইট( Website) থেকে বেশি পরিমাণে ভিজিটর/ ট্র্যাফিক নিয়ে আসা যায় । সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় ৩ টি ধাপে । যার মধ্যে রয়েছে অনপেজ এসইও, অফপেজ এসইও, এবং টেকনিক্যাল এসইও । আজকে আমরা জানবো টেকনিক্যাল এসইও কি (What is Technical SEO)  এই সম্পর্কে ।

 

টেকনিক্যাল এসইও কি (What is Technical SEO)?

 টেকনিক্যাল এসইওঃ টেকনিক্যাল এসইও হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি যা একটি ওয়েবসাইটকে অরগানিক র‌্যাঙ্কিং( Organic Ranking) পাওয়ার জন্য আধুনিক অনুসন্ধান ইঞ্জিনগুলির প্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে ।

 

টেকনিক্যাল এসইও এর প্রয়োজনীয়তা (Technical SEO Requirements):

 

 আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটে অনপেজ এসইও( On Page SEO) এবং অফপেজ এসইও( Off Page SEO) টেকনিক সঠিকভাবে ব্যবহার করে থাকেন তার মানে এই না যে আপনি সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে অবশ্যই র‌্যাঙ্ক করবেন । এর কারণ হল আপনার ওয়েবসাইটে যদি টেকনিক্যাল এসইও রিলেটেড কোন সমস্যা থাকে বা সঠিক না থাকে তাহলে এটা নিশ্চিত যে আপনি সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে র‌্যাঙ্ক করতে পারবেন না । টেকনিক্যাল এসইও গুলোর মধ্যে রয়েছে ওয়েবসাইট স্ট্রাকচার এবং ডিজাইন( Website structure & Design), পেজ লোডিং স্পীড( runner lading speed), মোবাইল ইউজেবিলিটি( Mobile Usability), সাইটম্যাপ( Sitemap) ইত্যাদি ।

 

 টেকনিক্যাল এসইও কাজের প্রক্রিয়া সমুহঃ (Procedures for technical SEO work):

 

  •     ওয়েবসাইট স্ট্রাকচার এবং ডিজাইন( Website structure & Design)
  •     পেজ লোডিং স্পীড( Page lading speed)
  •     মোবাইল ইউজেবিলিটি( Mobile Usability)
  •     সাইটম্যাপ ও রোবট টেক্সট ফাইল আপলোড( Sitemap &Robots.txt file upload)
  •   এস এস এল সার্টিফিকেট( SSL certificate)
  •   ফিক্সড ব্রোকেন লিংক( Fixed broken link)
  •   Crawler এরর মুক্ত রাখা( Crawler error fixing)
  •   ইউ আর এল স্ট্রাকচার( URL structure)
  •   স্ট্রাকচার্ড ডেটা( Structured data)
  •   থিন কনটেন্ট( Thin content)
  •   ডুপ্লিকেট কনটেন্ট( Duplicate content)
  •   ক্যানোনিকাল ট্যাগ( Canonical tags)
  •   ৪০৪ পেজ এরর মুক্ত রাখা( 404- Page error fixing)
  •   ৩০১ রিডাইরেক্ট( 301 redirects)

  • ওয়েবসাইট স্ট্রাকচার এবং ডিজাইন( Website structure & Design): ওয়েবসাইট স্ট্রাকচার এবং ডিজাইন যদি ভালো ও সুগঠিত হয় তাহলে ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইট বেশি পছন্দ করবে । আর ভিজিটররা যত বেশি আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে সার্চ ইঞ্জিনগুলিও আপনার ওয়েবসাইট তত বেশি পছন্দ করবে এবং র‌্যাঙ্ক করতে সহায়তা করবে ।

 

 পেজ লোডিং স্পীড( Page lading speed): প্রতিটি সার্চ ইঞ্জিনের জন্যই পেজ লোডিং স্পিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । পেজ লোডিং টাইমের উপরে কোন একটি ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং অনেকাংশে নির্ভর করে । আর প্রতিটি সার্চ ইঞ্জিন এই বিষয়টি অনেক বেশি গুরুত্ব দেয় । বিশেষ করে মোবাইল পেজ স্পীড । তার কারন হল আপনার ওয়েবসাইটের পেজ স্পীড ধীর গতির হওয়ার জন্য ওয়েবসাইটের কনভার্সন রেট( Conversion Rate) অনেক কমে যাবে তার সাথে ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট( Bounce Rate) অনেক বেড়ে যাবে । আপনি GTMetrix, Google Page Insight, অথবা Pingdom Website Speed Test এই রকম টুলগুলির মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটের স্পীড চেক করতে পারেন এবং এরর গুলো খুঁজে বের করে সমাধান করার পরে পেজ লোডিং স্পীড বাড়াতে পারেন ।

 

 মোবাইল ইউজেবিলিটি( Mobile Usability): বর্তমান সময়ে যেকোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করার ক্ষেত্রে ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ, ট্যাবলেট কম্পিউটারের পাশাপাশি মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে । যেসব ওয়েবসাইট গুলো মোবাইল ফ্রেন্ডলি এবং ফাস্ট লোডিং স্পীড সেগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন বেশি গুরুত্ব দেয় । ওয়েবসাইট বানানোর সময় তাই মোবাইল ফ্রেন্ডলি টেস্ট করতে হয় । যদি কোন ওয়েবসাইট মোবাইল ফ্রেন্ডলি না হয় সেক্ষেত্রে ঐ ওয়েবসাইটের গ্রহণ যোগ্যতা থাকে না সার্চ ইঞ্জিন গুলোর কাছে তেমন । তাই ওয়েবসাইট বানানোর সময় অবশ্যই সেটাকে রেসপনসিভ বা যেকোন ডিভাইসে যাতে দ্রুত লোড সেরকম ভাবে বানাতে হবে । মোবাইল ফ্রেন্ডলি টেস্ট করার জন্য প্রয়োজনে Google Mobile Friendlly Test নামের টুলস টি ব্যবহার করা যেতে পারে ।

এস এস এল সার্টিফিকেট( SSL certificate) : SSL এর পূর্ণ রপ(Secure Sockets Layer) । কোন একটি ওয়েবসাইটকে সিকিউর বা নিরাপদ( Secure) করার জন্য SSL Certificate ব্যবহৃত হয় । ওয়েবসাইট র‍্যাঙ্কিং এর জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । SSL সার্টিফিকেট আপনার ওয়েবসাইটকে HTTP( Hypertext Transfer Protocol) থেকে HTTPS( Hypertext Transfer Protocol Secure) করে দেয় যা আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর ও কাস্টমারদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায় । প্রতিটি ওয়েবসাইটেই এস এস এল সার্টিফিকেট( SSL instrument) Install করতে হয় । ইন্সটল করলে ওয়েবসাইটটিতে https কার্যকর হয় । যদি আপনার ওয়েবসাইটে SSL সার্টিফিকেট ইনস্টল করা না থাকে তাহলে URL বারের বাম দিকে “ Your connection to this site is not secure” লাল কালারের একটি মেসেজ শো করবে । আর যদি আপনার ওয়েবসাইটে SSL সার্টিফিকেট ইনস্টল করা থাকে সেই ক্ষেত্রে সেখানে একটি লক আইকন( Lock Icon) থাকবে যা ক্লিক করলে “ Connection is secure ” সবুজ কালারের ম্যাসেজটি শো করবে । এখন প্রায় সমস্ত ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি প্রথম বছরের জন্য তাদের প্যাকেজের সাথে ফ্রিতে SSL certificate প্রদান করে থাকে । এছাড়াও আপনি চাইলে আলাদাভাবে ক্রয় করেও আপনার ওয়েবসাইটে SSL certificate ইনস্টল করতে পারেন ।

 ফিক্স ব্রোকেন লিংক( Fixed broken link): ব্রোকেন লিংক হচ্ছে সেই সকল লিংক যেগুলো ঠিকমত কাজ করে না । অর্থাৎ যখন ওয়েবসাইটে রেফার করা কোন লিংক ক্লিক করা হয় ঐ লিংক গুলাতে তখন কোন ফলাফল দেখায় না । সেগুলাই মূলত ব্রোকেন লিংক । এসব লিংক ওয়েবসাইটের জন্য খুবই বিপদজনক । ওয়েবসাইটে অধিক পরিমাণে ব্রোকেন লিংক থাকলে সাইটের গ্রহণ যোগ্যতা হ্রাস পায় সার্চ ইঞ্জিন গুলোর কাছে । যা আপনার ওয়েবসাইট র‍্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে এবং এর পাশাপাশি গুগল অ্যাডসেন্স এর মধ্যেও সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে । কোন একটি ওয়েবসাইটে ব্লগপোষ্টের বা পেজের সংখ্যা যত বেশি হবে ব্রোকেন লিংকের সংখ্যাও বেড়ে যাবে । ব্রোকেন লিংক চেকার টুলস দ্বারা খুব সহজেই ব্রোকেন লিংকগুলো খুজে বের করা যায় । পরবর্তীতে সেই লিংক গুলোকে রিডাইরেক্ট করে নিতে হয় ।

 

Crawler এরর মুক্ত রাখা (Crawler error fixing):  আপনার ওয়েবসাইটটি Crawler এরর মুক্ত রাখতে হবে । তা না হলে সার্চ ইঞ্জিন বট আপনার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারবে না । ফলে আপনার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন পেজ এবং পোস্ট ইনডেক্সিং হবে না । আপনি র‍্যাঙ্কিং এ আসতে পারবেন না । (robots.txt ফাইল দিয়ে ব্লক করে রাখলে) । Crawler এরর গুলো আপনি গুগল সার্চ কনসোল( Google Search Console) এর Covarage অপশন থেকে জানতে পারবেন ।

ইউ আর এল স্ট্রাকচার( URL structure)

 একটি ভাল ইউ আর এল( URL) লেখার নিয়মসমুহঃ

·   Remove Extra Words

·  Relevant Keywords

·  Easily Readable

·  Utilize Hyphens and Underscores

·  Match URL and Titles

·  Short URL Is Best

·  Case sensitivity

·  Avoid keyword stuffing

 

 

 স্ট্রাকচার্ড ডেটা( Structured data) : কোন একটি ওয়েবপৃষ্ঠার কন্টেন্ট বোঝার জন্য সার্চইঞ্জিন( Search Machine) গুলো বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে । ওয়েবপৃষ্ঠায় স্ট্রাকচার্ড ডেটা ব্যবহার করে আপনি সার্চইঞ্জিন গুলোকে ওয়েবপৃষ্ঠার মানে বুঝতে সাহায্য করতে পারেন । বিস্তারিত জানতে structured data এই লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন ।

 

 থিন কনটেন্ট( Thin content): থিন কনটেন্ট বলতে, কোন একটি ওয়েব পৃষ্ঠায় বা ব্লগপোস্টে যদি খুব অল্প পরিমান কনটেন্ট থাকে তখন ঐ কনটেন্টগুলিকে থিন কনটেন্ট বলে । এসব কনটেন্টের ভ্যালু( value) ব্যবহারকারীদের কাছে নেই বললেই চলে । এমনকি সার্চ ইঞ্জিন গুলোর কাছেও এই কনটেন্টের কোন ভ্যালু( value) থাকে না । সর্বোপরি, গুগল( Google) এসব পৃষ্ঠাগুলি পছন্দ করে না যেগুলি কীওয়ার্ড দিয়ে স্টাফ করা থাকে ।

 ডুপ্লিকেট কনটেন্ট( Duplicate content): ডুপ্লিকেট কনটেন্ট বলতে এমন একটি কনটেন্টকে বোঝায় যা ইন্টারনেটে একাধিক জায়গায় প্রদর্শিত হয় । যদি একই বিষয়বস্তু একাধিক ওয়েব ঠিকানায় প্রদর্শিত হয়, তাহলে আপনি ডুপ্লিকেট কনটেন্ট পেয়েছেন । প্রযুক্তিগতভাবে জরিমানা না হলেও, ডুপ্লিকেট কনটেন্ট এখনও কখনও কখনও অনুসন্ধান ইঞ্জিনের র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রভাব ফেলতে পারে । যখন একই বিষয়বস্তু একাধিক ওয়েব ঠিকানায় প্রদর্শিত হয় তখন সার্চ ইঞ্জিন গুলোর নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পরে যে কোন প্রদত্ত অনুসন্ধানের প্রশ্নের সাথে কোন সংস্করণটি বেশি প্রাসঙ্গিক ।

৪০৪ পেজ এরর মুক্ত রাখা( 404- Page error fixing): ধরুন অনিবার্য কারণ বসত আপনার ওয়েবসাইটের কোনো একটি পেজ ডিলিট হয়ে গেছে বা আপনি কোনো কারণে তা ডিলিট করে দিয়েছেন । আবার সার্চ ইঞ্জিন গুলি যদি ঐ পেজ বা পোস্ট টিকে ইনডেক্স করে থাকে তবে সেই ক্ষেত্রে কেউ যদি আপনার ডিলিট হওয়া পেজেটিতে বা পোস্টটিতে ভিজিট করে তাহলে সে 404 error বা Page not found মেসেজটি দেখতে পাবে । 


ওয়েবসাইটে অল্প পরিমান পেজ বা পোস্ট থাকলে সেই ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা হয় না কিন্তু যদি আপনার ওয়েবসাইটে ২৫০- ৫০০ পোস্ট থাকে সেই ক্ষেত্রে অনেক 404 error  আসতে পারে । আচ্ছা একটু ক্লিয়ার করে বলি, কোন কারনে আপনার সাইটের একটি ব্লগপোষ্ট ডিলিট করলেন, কিন্তু সেই পোষ্টের করা ব্যাকলিংক বা ইন্টারনাল লিংক কিংবা সোশ্যাল সাইটে শেয়ার করা লিংক গুলো কিন্তু ঐ সকল ওয়েবসাইটে রয়েই গেছে । যদি কোন ভিজিটর সেই রিমুভ বা ডিলিট করা লিংকে প্রবেশ( Click) করে তবে সে একটি 404 error বা Page not found মেসেজটি দেখতে পায় এবং এর ফলে সেই ভিজিটর ওয়েবসাইটটি থেকে বের হয়ে যায় । 


যার ফলে সাইটের বাউন্স রেট বেড়ে যায় এবং ওয়েবসাইট র‍্যাংকিং বাধাগ্রস্থ করে । সুতরাং এই বিষয়টিও সতর্কতার সহিত লক্ষ্য রাখা উচিত । আপনি চাইলে এই বিষয়গুলি গুগল সার্চ কনসোল( Google Search Console) থেকে জানতে পারবেন ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন ।

 

 আমাদের শেষ কথা

 পরিশেষে একটি কথা না বললেই নয়, এসইও একটি অন গোয়িং প্রসেস । আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের অনপেজ, অফপেজ এবং টেকনিক্যাল এসইও এই বিষয়গুলির অপটিমাইজেশন পাঠটি সঠিকভাবে করতে পারেন তবে search engine result page (SERP) এ আপনার ওয়েবসাইটের ভালো অবস্থান দেখতে পাবেন আশা করি ।

 

 টেকনিক্যাল এসইও( Technical SEO) নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, আমাদেরকে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না ।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Comments system